বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের নামানঙ্কিত যে কোনো সৃজনশীল মানুষের জন্য ভীষণ আনন্দের”- বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট কবি ও সংগঠক কামরুল ইসলাম ।
আঙ্গিক ডান্স একাডেমি ইনস্টিটিউট, মুম্বাই কর্তৃক রবীন্দ্র পুরস্কার পেয়েছেন প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী প্রমিতা মল্লিক, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শ্রতি বন্দ্যোপাধ্যায়, ড. শুভাশিস ভট্টাচার্য এবং বাংলাদেশ থেকে বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক কবি কামরুল ইসলাম। এই পুরস্কার বঙ্গীয় পরিবারের সকলের জন্য উৎসর্গ করেছেন তিনি ।
গত ১৮ জুন ২০২২ সন্ধ্যার পূর্ব মুহূর্তে কলকাতার বৌদ্ধ ধর্মাঙ্কুর সভায় রবীন্দ্র পুরস্কারের ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট ও অর্থ সম্মানি কবি কামরুল ইসলামের হাতে হস্তান্তর করেন শ্রী শুভাশিস চট্র্যোপাধ্যায়। এজন্য একাডেমি’র প্রধান ড. শর্মিষ্ঠা চট্র্যোপাধ্যায়কে অশেষ কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি।
পুরস্কার প্রদানের অনুষ্ঠানে ড. শর্মিষ্ঠা চট্টোপাধ্যায় কে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা জানিয়ে রবীন্দ্র পুরস্কারে ভূষিত কবি কামরুল ইসলাম লিখিত বক্তব্যে বলেন- আঙ্গিক ডান্স একাডেমি’ ২০২২ সালে রবীন্দ্র পুরস্কারে আমাকে মনোনীত করায় আমি আন্তরিকভাবে অভিভূত ও আনন্দিত হয়েছি। গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিন্তা, অভিব্যক্তি, দর্শন ও কর্মযজ্ঞ বর্ণিল ও বিপুল। বাংলা ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতিকে তিনি বিশ্বসংসারে আনন্দ, সৌন্দর্যে এং কর্মে বিস্তৃত অধ্যায় সৃষ্টি করেছেন। ” আমি এই পৃথিবীকে ভালোবাসি।” ছিন্নপত্রাবলীর এই উচ্চারণকে বিশ্বব্যাপী প্রসারিত করতে তিনি সমর্থ হয়েছেন। বাঙালির বিশ্বজগৎ, গুরুদেবের সৃষ্টিশীলতায় শক্তিশালী রূপ নিয়েছে। সর্বমানবিকবোধে বিশ্বানুভূতি সৃষ্টি করা এবং বিশ্ব-ঐক্যের ভাবনায় নবজাগরণের আহবান করেছেন। বিশ্বভারতী, শ্রীনিকেতন কবির ভাবনার প্রতিফলনের সর্বোচ্চ দার্শনিক ও প্রায়োগিক কাঠামো নির্মিত হয়েছে। ‘ একটি মহাযুদ্ধের তূর্যধ্বনিতে আজ যুগারম্ভের দ্বার খুলেছে।… এখন থেকে প্রত্যেক দেশকে নিজের জন্য যে-চিন্তা করতে হবে, সে-চিন্তার ক্ষেত্র হবে জগৎজোড়া।’ গুরুদেবের বিশ্বমুখী সাধনার ঐশ্বর্যে আমরা বাঙালিরা বসবাস করছি। বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্যকে নবরূপের বৈচিত্র্য মাধুর্যে, উৎকর্ষে বিশ্বজনীনে তিনি পৌঁছে দিয়েছেন।

আঙ্গিক ডান্স একাডেমি’র কার্যক্রম বিশ্বজনীন। আমরা একথা বিশ্বাস করি, বাঙালি সংস্কৃতির সেবকরা
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মানস-সন্তান। বাঙালির ঐক্য দেশকালের সীমা অতিক্রম করে বিশ্বব্যাপী সংশ্লিষ্ট হয়েছে।
বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, সাংস্কৃতিক আন্দোলনের প্রেরণা গুরুদেবের ভাবনায়। বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত ‘আমার সোনার বাংলা’, যা এই দেশের ঐতিহ্য ও ইতিহাসের অংশ হয়েছে।
আমি যখন ‘রবীন্দ্র পুরস্কারে’র সংবাদটি পেলাম, তা আমার অন্তরকে আবেগমথিত করে আনন্দে উদ্বেলিত করেছে। আমার কর্মস্পৃহা বৃদ্ধিতে ‘রবীন্দ্র পুরস্কার’ অশেষ প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। এযেন ‘মানব-মৈত্রী’র বিশ্ববন্ধন।
বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের একজন কর্মী হিসেবে আমার কার্যক্রম গুরুদেবের আদর্শে পরিচালিত হয়। বঙ্গীয়’র প্রেরণা গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম । বাঙালির বিশ্বসভা’র ভাবনাটিও গুরুদেবের ভাবনা। ‘রবীন্দ্রসৃষ্টিসৌধে’ অনুভব করি, ‘মহাবিশ্বে মহকাশে মহাকাল-মাঝে/ আমি মানব একাকী ভ্রমি বিস্ময়ে, ভ্রমি বিস্ময়ে।’ মানস চৈতন্যে কারুময় প্রাসাদটি অপরূপ হয়ে ওঠে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে গবেষণার নানা দিগন্ত প্রসারিত হয়েছে। বাঙালির নৃত্য প্রসঙ্গে গতবছর আঙ্গিকের প্লাটফর্মে কিছু কথা বলার সুযোগ হয়েছিল। সেসব নিয়ে লেখাও প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ও বাঙালির নৃত্যধারার বিষয় নিয়ে গবেষণা, চর্চা অব্যাহত আছে। আঙ্গিকের নৃত্যচর্চার সাধনা মুম্বাইয়ের সীমা থে্কে বহমুখী প্রশস্ত ক্ষেত্র সৃষ্টি করছে। ‘বিশ্ব সাথে যোগে যেথায় বিহারো/ সেইখানে যোগ তোমার সাথে আমারো।’
আঙ্গিক ডান্স একাডেমি’র পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান সফল হোক। ‘সৃষ্টিশীল ঐক্য’ বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত হোক।
এদিকে, বঙ্গীয় সাহিত্য সংস্কৃতি সংসদের সাধারণ সম্পাদক কবি কামরুল ইসলাম আঙ্গিক ডান্স একাডেমি রবীন্দ্র পুরস্কার পাওয়ায় প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন, জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সভাপতি অধ্যক্ষ কবি কায়সার আহমেদ দুলাল, সাধারণ সম্পাদক কবি রিপন শান, সম্মানীয় সদস্য কবি অধ্যাপক মিলি বসাক, কবি স্বপন ঘোষ, কবি হাওলাদার মাকসুদ, কবি গাজী তাহের লিটন, কবি শহিদুল ইসলাম জামাল, কবি নজরুল ইসলাম জামাল, কবি কামাল হোসেন শাহীন প্রমুখ ।
